আমি মোঃ তৌহিদুল আলম আসিফ। কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে এ বছর বিএসএস শেষ করেছি। পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই ক্লাসের বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে সবাই নির্দিষ্ট পরিমান চাঁদা নির্ধারণ করে নৌ ভ্রমণ এর আয়োজন করলাম। এরপর নির্দিষ্ট দিনে যাত্রা শুরু হলো আমাদের।

দিনটা ছিল শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর ২০১৮)। আগের রাতে তেমন ঘুমাতে পারিনি আমি। শুধু সকালের আলোর অপেক্ষায় ছিলাম। পরের দিন খুব ভোরে উঠে নামাজ পড়ে হালকা নাস্তা করে লক্ষ্মীবাজারের ভিক্টোরিয়া পার্কে গিয়ে সবার উপস্থিতির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।
বেশ কিছুক্ষণ পর সবাই একত্রিত হয়ে পায়ে হেঁটে সদর ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। প্রায় ১০ মিনিট পর সদর ঘাট লঞ্চ টার্মিনালে পৌঁছে যাই আমরা। এরপর এক এক করে সবাই লঞ্চে উঠি। সবাই আনন্দোল্লাস করার জন্য লঞ্চের ছাদে উঠে যাই।

লঞ্চ ভ্রমণে কিসের আবার বিশ্রাম? লঞ্চে সবাই নিজেদের মত কিংবা গ্রুপ হয়ে সেলফি তুলতে ব্যস্ত। আমিও কিন্তু ব্যতিক্রম ছিলাম না। কিছুক্ষণ পর সবাইকে সকালের নাস্তা করার জন্য ডাকা হলো। ইতিমধ্যে লঞ্চ ছেড়ে দিয়েছে। যাই হোক সকালে পরাটা ও ডাল-ভাজি দিয়ে নাস্তা পরিবেশন করা হয়। নাস্তা করার পর নিজেদের মধ্যে যার যার আড্ডায় মেতে উঠি আমরা। লঞ্চ ভ্রমণে পুরোটাই ছিলো গান, কৌতুক আর বাউল গান।

এদিকে নদীর পানিতে রৌদ্রের ঝিলমিল আর আকাশে পাখিদের ডানা মেলে উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য দেখে মনটা নেচে উঠল এবং বেশীই আনন্দ পাই।
তখন মনের সুরে গাইতে লাগলাম, বাংলাদেশ তুমি আমার আশা, বাংলাদেশ তুমি আমার ভালবাসা। মধু কই ক। বাংলাদেশ তুমি আমার অহংকার, বাংলাদেশ তুমি আমার অহংকার। গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান এবং মধু কই কই আরে বিষ খাওয়াইলা সহ আরো কিছু মজার গান গাওয়া হয়………
চাঁদপুর পৌঁছে আমাদের অনেকেই স্থানীয় একটি মসজিদে নামাজ আদায় করে নেয়। এরপর চাঁদপুরের বরিশাল হোটেলে দুপুরের খাবার খেয়ে সবাই যার যার মত আড্ডায় মগ্ন হই। বিকেল ৩.৩০ ঘটিকায় পদ্মা নদীর বালুচরে যাই সবাই মিলে ৫০০ টাকায় ৩০ মিনিটের জন্য নৌকা ভাড়া করি।
পড়ন্ত বিকেলে মোহনপুর, চাঁদপুরের সৌন্দর্য ছিল এক অসাধারণ দৃশ্য। এটা একটি গ্রাম্য পরিবেশ ছিলো। সেখানে অনেকেই সেলফি নিয়ে ব্যস্ত ছিলো। বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটানোর পর আবার লঞ্চে উঠি। ওহ কি একটা কথা বলা হয়নি বন্ধু রফিক শেষ বিকেলে দুষ্টুমিতে সবার চোখে পড়ার মত। শেষ বিকেলটা অনেক আনন্দ মূখর ছিল।

সন্ধ্যা ৬ টায় নিজ গন্তব্যে যাওয়ার জন্য লঞ্চে উঠি। একঘন্টা পরে লঞ্চ ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। অবশেষে রাত ১০.০০ ঘটিকায় সবাই সদরঘাটে আসি। এরপর সব খরচের পর অবশিষ্ট টাকা দিয়ে নাস্তা করি। সব শেষে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছি রাত ১১ টায়। এর আগে একে অপরের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং বিদায় জানায়। একই সাথে এই রকম রোমাঞ্চকর লঞ্চ ভ্রমণ আয়োজন করার জন্য আয়োজকদেরকে ধন্যবাদ ও মোবারকবাদ জানাতে ভুলিনি।
লেখক
মোঃ তৌহিদুল আলম আসিফ
শিক্ষার্থী, কবি নজরুল সরকারি কলেজ
|